সুস্থতার পথে

একজন মানুষ ৭৫ ভাগ রোগ থেকে মুক্ত হতে পারে কোনো ওষুধ ছাড়াই। কারণ এ রোগগুলো হলো মনোদৈহিক। দেহের রোগ ওষুধে ভালো হতে পারে। কিন্তু মনোদৈহিক রোগ নিরাময়ে ওষুধের কোনো প্রয়োজন নেই। মনের জট খুলে গেলে এ রোগগুলো এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। কোয়ান্টাম মেথডে হাজার হাজার মানুষের তাৎক্ষণিক নিরাময়ের রহস্য এখানেই। কোর্সে এসে বসে আলোচনা শুনতে শুনতে আর মেডিটেশন করতে করতেই মনের জট খুলে গেছে। বহু বছরের রোগ-যন্ত্রণা থেকে মুক্ত হয়ে সুস্থ দেহ আর প্রশান্ত মন নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন তারা।

কোয়ান্টাম নিরাময়

  • আমরা কেন রোগাক্রান্ত হই?
    চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা দেখেছেন যে, শতকরা ৭৫ ভাগ রোগের কারণই মনোদৈহিক। অর্থাৎ রোগের লক্ষণ দেহে প্রকাশ পেলেও এর উৎস হচ্ছে মন। আর বাকি ২৫ ভাগ রোগের কারণ জীবাণু সংক্রমণ, ভুল খাদ্য গ্রহণ, ব্যায়াম না করা এবং দৈহিক আঘাত, ওষুধ ও অপারেশনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। প্রশ্ন হতে পারে মনের কারণে কীভাবে দেহের রোগ হয়? 
    আসলে মন যখন ভাবাবেগজনিত চাপ বা উৎকণ্ঠার সম্মুখীন হয় তখন শরীর নানাভাবে প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে। রক্তে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক উপাদান নিঃসরণের পাশাপাশি হৃৎকম্পন বেড়ে যায়, রক্তচাপ বেড়ে যায়, মলাশয়ের তৎপরতা বাড়ে, মূত্রাশয় সহজে সঙ্কুচিত হয়। চূড়ান্ত পর্যায়ে এটা ডায়রিয়া এবং প্রস্রাব বৃদ্ধির রূপ নিতে পারে। ব্রেন দ্বারা সরাসরি নিয়ন্ত্রিত নার্ভাস সিস্টেম আমাদের ত্বকের সাথে গভীরভাবে সংযুক্ত। তাই ত্বকের ওপর আলতো করে স্পর্শ করে আদর করার মাধ্যমে শিশুদের শান্ত করা যায় আবার ত্বকে চিমটি কেটে সহজেই স্নায়ুকে উত্তেজিত করে দেয়া যায়। ‘ভয়ে বিবর্ণ হয়ে যাওয়া’ বা ‘লজ্জায় লাল হয়ে যাওয়া’ কথাগুলো ত্বকের ওপর মনের প্রভাবকেই নির্দেশ করে। তাই উৎকণ্ঠার কারণে স্কিন র‌্যাশের মতো চর্মরোগও হতে পারে। 
    ডা. হার্বার্ট বেনসন এবং ডা. এডমন্ড জ্যাকবসন এই টেনশন বা উৎকণ্ঠার কারণে সৃষ্ট রোগের দীর্ঘ তালিকা তৈরি করেছেন। এই তালিকায় রয়েছে হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, অনিদ্রা, বাতব্যথা, বিষণ্নতা বদমেজাজ, গ্যাস্ট্রিক আলসার, ডায়রিয়া, বহুমূত্র, ঘাড়ে ব্যথা, মেরুদণ্ডে ব্যথা ইত্যাদি। 
    নিউরোসায়েন্টিস্টরা বলেছেন, টেনশন বা উৎকণ্ঠা বা স্ট্রেস হচ্ছে এমন এক রোগপ্রক্রিয়া বা মানসিক অবস্থা যা ব্রেনের বাস্তব কার্যক্রমকে প্রভাবিত করে শারীরিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। এই শারীরিক প্রতিক্রিয়া আবার ব্রেনের কার্যক্রমকে প্রভাবিত করে। টেনশনে ব্রেন ও শরীরের ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া কাজ করে দুষ্টচক্রের মতো। 
    উৎকণ্ঠা বা স্ট্রেসের প্রথম শারীরিক প্রতিক্রিয়া হচ্ছে মুহূর্তে কাজে লাগানোর জন্যে বিভিন্ন পেশীকে শক্ত করে ফেলা। এই শক্ত পেশীগুলো আবার সাথে সাথে স্নায়ুর মাধ্যমে ব্রেনে খবর পাঠায়, যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সে তৈরি। দৃশ্যত ব্রেন এই খবরকে ব্যাখ্যা করে তার আশঙ্কার প্রমাণ হিসেবে। অর্থাৎ ব্রেন তখন আরও নিশ্চিত হয় যে, সত্যিকারের দৈহিক বিপদ আসন্ন। তাই ব্রেন তখন প্রতিটি পেশীকে সজাগ হওয়ার জন্যে বার্তা পাঠাতে থাকে এবং শরীরের বিভিন্ন অঙ্গকে সতর্ক করে দেয়ার জন্যে রাসায়নিক বার্তা প্রেরণ করে। শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ এই ক্রমাগত অর্থহীন সতর্কীকরণের ফলে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ে। তাতে দেহের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ে এবং রোগ নিরাময় ক্ষমতা হ্রাস পায়। একই সাথে দৈহিক ও মানসিক অস্বস্তি বাড়তে থাকে। পরিণামে নানা ধরনের রোগ সৃষ্টি হয়। 
    দেহের ওপর মনের এই অনভিপ্রেত আক্রমণের দুষ্টচক্রকে আপনি শুধুমাত্র পেশীর আচরণ প্রক্রিয়া পাল্টে দিয়েই প্রতিহত করতে পারেন। পেশী উত্তেজিত ও শক্ত হয়ে উঠলে আপনি সচেতনভাবে পেশীকে শিথিল করুন। পেশী শিথিল হওয়ার সাথে সাথে সে ব্রেনে খবর পাঠাবে সব ঠিক আছে, কোনো বিপদের আশঙ্কা নেই। আর তখন ব্রেনও সতর্কাবস্থা প্রত্যাহার করবে। ব্রেনে পেশী থেকে যত কম সতর্কাবস্থার বাণী যাবে, ব্রেন তত বেশি পরিমাণে শিথিল হবে এবং এক পর্যায়ে সতর্কাবস্থা থেকে পরিপূর্ণ শিথিল অবস্থায় পৌঁছে যাবে। আর মন তখন উৎকণ্ঠার পরিবর্তে হবে প্রশান্ত। যে মন আপনার সর্বনাশ করতে যাচ্ছিল, তা-ই পরিণত হবে নিরাময়ের বাহনে।
  • নিরাময়ের ক্ষেত্রে বিশ্বাসের ভূমিকা কী?
    বিংশ শতাব্দিতে ওষুধ সার্জারি বা প্রযুক্তি নির্ভর চিকিৎসাব্যবস্থা হয়ে পড়েছিলো অতিমাত্রায় যান্ত্রিক। ফলে নিরাময়ের ক্ষেত্রে বিশ্বাস বা আধ্যাত্মিকতার কোনো প্রভাব নেই- এতদিন এটাই ছিলো অধিকাংশের ধারণা। কিন্তু এ ধারণায় প্রথম ফাটল ধরান হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের গবেষক ডা. হার্বার্ট বেনসন। ১৯৭৫ সালে প্রকাশিত তার বেস্ট সেলার ‘রিলাক্সেশন রেসপন্স’ গ্রন্থে তিনি দেখান মেডিটেশন বা প্রার্থনা করে কীভাবে অনিদ্রা, সন্তান জন্মদানে অক্ষমতা এবং ব্যথা-বেদনায় আক্রান্ত রোগীরা আরোগ্য লাভ করেছেন। তিনি বলেন, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার কারণে যে রোগ-বালাই হয় প্রচলিত চিকিৎসায় তাতে খুব একটা কাজ হয় না। বরং এক্ষেত্রে ৬০-৯০% নিরাময় হয় রোগীর বিশ্বাসের কারণে। 
    বেনসনের পর এ নিয়ে গবেষণা করেছেন ড. হ্যারল্ড কোনিগ, ড. ডেভিড লারসন, ড. জেফ্রি লেভিন প্রমুখ। এ ধারণাকে জনপ্রিয় করেছেন ড. দীপক চোপড়া, ড. এন্ড্রু ওয়েল, ড. বার্নি সীজেল ও ড. ল্যারী ডসি প্রমুখ চিকিৎসাবিদরা। 
    নিরাময়ে মেডিটেশন এবং প্রার্থনার ভূমিকা ব্যাখ্যায় গবেষক ডা. হার্বার্ট বেনসন বলেন, এক অসীম ও পরম সত্তায় বিশ্বাস স্থাপনের আকুতি মানুষ তার জেনেটিক ব্লুপ্রিন্টেই বহন করছে। আর এ বিশ্বাস নিরাময়ের এক অপরিহার্য অনুষঙ্গ। এমনকি ওষুধ বা সার্জারিও যে কার্যকর হয়, তার মূল কারণ রোগীর বিশ্বাস- চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় যাকে প্লাসিবো ইফেক্ট বলা হয়। ফলে প্রার্থনার মাধ্যমে রোগীর মধ্যে যখন বিশ্বাস সঞ্চারিত হয়, তখন তার দেহের নিউরো-অ্যানাটমিক্যাল সিস্টেম প্রভাবিত হয়ে শুরু হয় রোগমুক্তির প্রক্রিয়া। এক অদম্য ইতিবাচক শক্তি তখন রোগ বা সমস্যার নেতিবাচক মূল কারণকে দূরীভূত করে সুস্থ করে তোলে, সমাধানের পথ দেখায়।
  • মেডিটেশন কেন একজন মানুষকে সুস্থতার পথে নিয়ে যায়?
    আমরা দেখেছি মনোদৈহিক শতকরা ৭৫ ভাগ রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে ওষুধের কোনো ভূমিকা নেই। মনের জট খুলে গেলে, সুস্থ জীবনদৃষ্টি গ্রহণ করলে এ রোগগুলো এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। আর মেডিটেশন হচ্ছে মনের জট খোলার, সুস্থ দৃষ্টিভঙ্গি বা জীবনচেতনা পরিবর্তনের সবচেয়ে সহজ পথ। আসলে ব্যথা-বেদনার বেশিরভাগই মনোদৈহিক। মনের দুঃখ কষ্ট ক্ষোভ হতাশা গ্লানি জমে তা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে ব্যথা-বেদনা রূপে প্রকাশ পায়। ক্রনিক রোগগুলোর কারণও তা-ই। মেডিটেশনে এলে মনের ভেতর থেকেই বের হয়ে যায় অপ্রয়োজনীয় এ জঞ্জালগুলো। বইতে শুরু করে নিরাময়ের সুবাতাস।
  • মনছবি বা ভিজুয়ালাইজেশন কি সত্যিই নিরাময়ের ক্ষেত্রে কার্যকর?
    আমরা দেখেছি মনোদৈহিক শতকরা ৭৫ ভাগ রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে ওষুধের কোনো ভূমিকা নেই। মনের জট খুলে গেলে, সুস্থ জীবনদৃষ্টি গ্রহণ করলে এ রোগগুলো এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। মনছবি বা ভিজুয়ালাইজেশন আসলে মেডিটেশনের মাধ্যমে নিরাময়েরই এক চমৎকার হাতিয়ার। দেখা গেছে বহু ক্ষেত্রে যেখানে প্রচলিত ওষুধ নিরাময়ে ব্যর্থ হয়েছে সেখানে ভিজুয়ালাইজেশন বা মনছবি চমৎকারভাবে নিরাময়ের কাজ সম্পন্ন করেছে। 
    ডাক্তাররা দীর্ঘদিন ধরেই দেহের ওপর মনের প্রভাব সবিস্ময়ে লক্ষ্য করে আসছেন। মানুষ মনে দুঃখ পেলে তার ল্যাক্রিমাল গ্ল্যান্ড প্লাবিত হয় ফলে চোখে অশ্রু চলে আসে। বাস্তব অথবা কাল্পনিক বিপদ হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন বাড়িয়ে দেয়, রক্তে সুগারের পরিমাণ বাড়ায়, রক্ত চাপ বাড়ায়, শ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুততর করে। মনে ক্রোধ সৃষ্টি হলেও এইসব শারীরিক লক্ষণ প্রকাশ পায়। ডাক্তাররা এখন আরও দেখছেন যে, শুধু আবেগই শারীরিক পরিবর্তন ঘটায় না, সুনির্দিষ্ট মনছবিও শরীরের উপর বিরাট প্রভাব ফেলে। 
    মনছবি বা ভিজুয়ালাইজেশনের শারীরিক প্রভাব সম্পর্কে প্রথম বৈজ্ঞানিক গবেষণা করেন ড. এডমন্ড জ্যাকবসন। এই শতকের বিশের দশকে তিনি আবিষ্কার করেন যে, কেউ যখন নিজে দৌড়াচ্ছে বলে মনছবি দেখে বা ভিজুয়ালাইজ করে তখন তার পায়ের পেশীতে স্পন্দন সৃষ্টি হয়। 
    ব্যায়ামের ব্যাপারে মনছবি কতখানি কার্যকর বা মনছবি ক্রীড়াবিদদের দক্ষতা ও শক্তি বাড়ায় কি না এ সম্পর্কে নর্থ আরিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্যাল থেরাপির প্রফেসর ড. মার্ক কর্নওয়াল বিভিন্ন ধরনের গবেষণা চালান। গবেষণার পর এ বিষয়ে তার জবাব হচ্ছে হ্যাঁ। তার এই গবেষণা সম্পর্কে একটি রিপোর্ট কানাডার ‘ন্যাশনাল ইনকোয়েরার’ পত্রিকার ১৯৯১ সালের ১৪ জানুয়ারি সংখ্যায় প্রকাশিত হয়। 
    ড. কর্নওয়াল গবেষণার জন্যে ২১ থেকে ২৫ বছর বয়স্ক ২৪ জন কলেজ ছাত্রীর পায়ের শক্তি ব্যায়াম মেশিনে মেপে নেন। এদেরকে দুটি গ্রুপে ভাগ করেন। ১২ জন ছাত্রী ৩ দিন দৈনন্দিন রুটিনের পাশাপাশি নিরিবিলি কক্ষে শান্তভাবে বসে মনছবি দেখে যে, তারা ডান পায়ের পেশীর ব্যায়াম করছে। মনছবি দেখতে গিয়ে তারা বাস্তবে পেশীর ব্যায়াম করছে কি না, তা শনাক্ত করার জন্যে তাদের পেশীর সাথে ইলেক্ট্রয়েড সংযুক্ত করে দেয়া হয়। অপর ১২ জন তাদের স্বভাবিক দৈনন্দিন রুটিন অনুসরণ করে। ৪র্থ দিনে পেশী শক্তি মেপে দেখায় যায় যে, যারা পেশীর ব্যায়াম করার মনছবি দেখেছে, তাদের পেশীর বল ১৩% বেড়েছে। আর অপর গ্রুপের পেশীর বল অপরিবর্তিত রয়ে গেছে। ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ড. কর্নওয়াল অভিমত প্রকাশ করেছেন, মনছবি দেখে শরীরের যেকোনো পেশী বা অঙ্গের বল বাড়ানো যেতে পারে। 
    অস্ট্রেলিয়ার মনোবিজ্ঞানী এলান রিচার্ডসন দেখিয়েছেন যে, মনছবির মাধ্যমে দৈহিক দক্ষতাও বাড়ানো যায়। তিনি তরুণ বাস্কেটবল খেলোয়াড়দের তার গবেষণায় অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানান। প্রথম গ্রুপ ২০ দিন প্রতিদিন ২০ মিনিট করে ফ্রি থ্রো নিক্ষেপ অনুশীলন করে। দ্বিতীয় গ্রুপ অনুশীলন করা থেকে বিরত থাকে। আর তৃতীয় গ্রুপ মনছবির মাধ্যমে মনে মনে ২০ দিন প্রতিদিন ২০ মিনিট করে অনুশীলন করে। তারা শিথিলায়ন করে মনছবি দেখে যে, তারা সুনিপুণভাবে বল বাস্কেটে নিক্ষেপ করছে। তিনটি গ্রুপ সমান দক্ষতা নিয়েই যাত্রা শুরু করেছিল। ২০ দিন পর পরীক্ষা করে দেখা যায় যে, প্রথম গ্রুপ যারা নিয়মিত বাস্তবে অনুশীলন করেছে তাদের দক্ষতা বেড়েছে ২৪%। দ্বিতীয় গ্রুপের কোনো উন্নতি হয় নি। আর তৃতীয় গ্রুপ যারা মনছবির মাধ্যমে মনে মনে অনুশীলনের কল্পনা করেছে তাদের দক্ষতা বেড়েছে ২৩%। তাই আজকাল ক্রীড়াবিদরা একই সাথে বাস্তব অনুশীলন ও মনছবি- এই দুই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তাদের দক্ষতার সর্বোত্তম প্রয়োগ করছেন। মনছবির প্রয়োগ দ্বারা রোগ নিরাময়ের প্রক্রিয়া আমেরিকায় শুরু করেন ডা. কার্ল সিমনটন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ফোর্টওর্থ-এ ক্যান্সার কাউন্সেলিং সেন্টারে ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসায় ব্যাপকভাবে মনছবি ব্যবহার করে দেখেছেন, শুধুমাত্র ওষুধ সেবনকারীদের তুলনায় মনছবি প্রয়োগকারীরা বেশি দিন বেঁচে থাকেন। অনেকে পুরোপুরি ক্যান্সারমুক্তও হয়ে যান। 
    একই প্রক্রিয়ায় সিঙ্গাপুরের ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী বি জে লী সিয়েনের ক্যান্সার ভাল হয়ে যায়। বিখ্যাত সাময়িকী এশিয়া উইকের ৩০ জুন, ১৯৯৩ সংখ্যায় ‘দি পাওয়ার অব মেডিটেশন’ নিবন্ধে বলা হয়, বি জে লী সিয়েন-এর লিমফেটিক ক্যান্সার ধরা পড়ে গত নভেম্বরে। এরপর তিনি মেডিটেশন করতে শেখেন। ১৮ সপ্তাহের কেমোথেরাপি এবং মেডিটেশনের পর ডাক্তাররা তাকে ক্যান্সারমুক্ত বলে ঘোষণা করেন। রিপোর্টে বলা হয়, ডাক্তাররা এখন অধিক হারে রোগীদের মেডিটেশন করার পরামর্শ দিচ্ছেন। সিঙ্গাপুরের টিউমার বিশেষজ্ঞ ডা. ইয়াপ বো সেঙ বলেন, হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে মেডিটেশন টেনশন থেকে মুক্তি দেয়, রক্ত সঞ্চালন ব্যবস্থার উন্নতি ঘটায় এবং উচ্চ রক্তচাপ হ্রাস করে। শতকরা ৭০ ভাগ রোগ নিরাময়েই মেডিটেশন উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সহায়তা করতে পারে।

Comments

Popular posts from this blog

**একটা উপদেশ মূলক গল্প**

"একটি শিক্ষা মুলক গল্প"

উপদেশ মূলক ছোট গল্প